জার্মানির কোলন শহরে শুরু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য ও পানীয় বাণিজ্য মেলা ‘আনুগা ২০২৫’, যেখানে বাংলাদেশ এবার দৃঢ় ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করছে।
৪ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছে ১১০টিরও বেশি দেশের প্রায় ৮ হাজার প্রতিষ্ঠান এবং প্রায় ১,৪০,০০০ বাণিজ্য প্রতিনিধিসহ দর্শনার্থী। অংশগ্রহণকারী দেশ ও প্রদর্শকের সংখ্যা বিবেচনায় এবারের আয়োজন আনুগার ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপক। এবারের মূল আকর্ষণ হিসেবে স্থান পেয়েছে উদ্ভিদনির্ভর ও সেল-কালচিভেটেড খাদ্যপণ্যের বিকল্প উপস্থাপন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সাতটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে- Danish Foods Ltd, Fulkoli Bread & Biscuit Industries Ltd, IFAD Multi Products Ltd, Kazi Food Industries Ltd, Kishwan Snacks Ltd, Mashud Agro Processing Food Product এবং Tanveer Food Ltd।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (EPB)-এর তত্ত্বাবধানে এবং বার্লিনে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের সমন্বয়ে নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করছে। এছাড়া Pran Group স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব স্টল স্থাপন করেছে।
ইউরোপ-বিশেষ করে জার্মান বাজার বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্যের জন্য সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্ববৃহৎ কৃষিপণ্য আমদানিকারক দেশ, যেখানে গত বছর আমদানি হয়েছে প্রায় ৬৮ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের ভোক্তাবান্ধব খাদ্যপণ্য।
বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জুলকার নাইন অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ইউরোপীয় বাজারে টেকসই অবস্থান গড়ে তুলতে হলে ধারাবাহিক অংশগ্রহণ এবং বাজার- উপযোগী পণ্য উন্নয়ন অপরিহার্য। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের পণ্য যেমন মিষ্টান্ন, নুডলস, শুকনো ফল ও সবজি, ভিনেগার-সংরক্ষিত পিকলস, ভেগান মাংস, কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত পণ্য, রেডি-টু-ইট খাবার ও জৈব খাদ্য ইউরোপীয় ভোক্তাদের ক্রমবর্ধমান পছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইউরোপীয় বাজারে সফল হতে হলে রপ্তানিকারকদের অবশ্যই ইইউ’র প্যাকেজিং, লেবেলিং, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নিয়মকানুন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে নতুন পণ্য উদ্ভাবন, আন্তর্জাতিক মান সার্টিফিকেশন অর্জন এবং বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্যশিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করার আহ্বান জানান।