সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) লক্ষ্য করে একযোগে ৭০টিরও বেশি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল চারটার দিকে মার্কিন সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন হক আই স্ট্রাইক’ নামে এই অভিযান শুরু করে। এতে জর্ডানের যুদ্ধবিমানও অংশ নেয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মধ্য সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আইএসের অবকাঠামো, অস্ত্রাগার ও অবস্থান লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, অভিযানে যুদ্ধবিমান, অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও আর্টিলারি ব্যবহার করে ১০০টিরও বেশি নির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদী গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে। আইএসকে সামরিকভাবে দুর্বল করার লক্ষ্যে এটিকে একটি বড় ও সমন্বিত অভিযান হিসেবে উল্লেখ করেছে সেন্টকম।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, দেইর আজ জোর প্রদেশে চালানো হামলায় আইএসের অন্তত পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে স্থানীয় ড্রোন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংগঠনটির এক শীর্ষ সদস্যও রয়েছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর ওপর হামলার কঠোর জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা মার্কিন নাগরিকদের হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে নির্মম প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, এটি নতুন করে যুদ্ধ শুরুর ঘোষণা নয়; বরং পরিকল্পিত প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের বাস্তবায়ন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর সিরিয়ার পালমিরা এলাকায় আইএস সদস্যদের অতর্কিত হামলায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন। এ ঘটনায় আরও তিন মার্কিন সেনা আহত হন। ওই ঘটনার পর থেকেই আইএসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রতিশোধমূলক অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল।
সিরিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও এই অভিযানে গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২৪ সালে বাশার আল আসাদের সরকার পতনের পর ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। আইএস দমনে সিরিয়া বর্তমানে আন্তর্জাতিক জোটে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে এবং এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দিচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি