চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকখোঁ ৪ ডিসেম্বর সকালে বেইজিংয়ে গণ-মহাভবনে বৈঠক করেছেন।
সি চিন পিং বলেন, বর্তমানে বিশ্ব পরিস্থিতিতে জটিল পরিবর্তন ঘটছে। চীন ও ফ্রান্সের উচিত দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে বহুপক্ষবাদ রক্ষা করা এবং ইতিহাসের সঠিক পক্ষে দাঁড়ানো। চীন ফ্রান্সের সঙ্গে সবসময় দু’দেশের জনগণের মৌলিক স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক সমাজের দীর্ঘস্থায়ী স্বার্থ বিবেচনা করে, সমান সংলাপ ও উন্মুক্ত সহযোগিতা করবে। তারা একটি সমান ও সুশৃঙ্খল বহুমেরু বিশ্ব এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের প্রচারে নতুন অবদান রাখবে।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, বাইরের পরিবেশ যত পরিবর্তনই হোক না কেন, চীন ও ফ্রান্সের উচিত বড় দেশের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরস্পরের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারস্পরিক সমর্থন করা এবং চীন ও ফ্রান্সের সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি রক্ষা করা। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির চতুর্থ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ১৫তম পাঁচসালা পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, যা আগামী ৫ বছরে চীনের উন্নয়নের জন্য দিকনির্দেশনা দিয়েছে এবং বিশ্বের কাছে সুযোগের একটি তালিকাও তুলে ধরেছে। চীন ও ফ্রান্সের উচিত মহাকাশ, পরমাণু শক্তিসহ ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্রের সহযোগিতাকে সম্প্রসারণ করা। পাশাপাশি সবুজ অর্থনীতি, ডিজিটাল অর্থনীতি, জীবাণু ওষুধ (বায়োমেডিসিন), এআই এবং নতুন জ্বালানি ক্ষেত্রের সহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত। চীন ফ্রান্সের আরও বেশি উন্নত মানের পণ্য আমদানি করতে এবং আরও বেশি ফরাসি প্রতিষ্ঠানের চীনে বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে আগ্রহী। চীনও আশা করে, ফ্রান্স চীনা প্রতিষ্ঠানের জন্য ন্যায়সংগত পরিবেশ প্রদান করবে।
বৈঠকে সি চিন পিং বলেন, চীন ও ইউরোপের ৫০ বছরের বিনিময় ও সহযোগিতা উভয় পক্ষের জন্যই কল্যাণকর হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরবরাহ ও শিল্প চেইন গভীরভাবে যুক্ত হয়েছে। উন্মুক্ত সহযোগিতা সুযোগ সৃষ্টি করে, অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদ কেবল নিজেকেই আলাদা করে দেয়। সংরক্ষণবাদ বিশ্বের শিল্প কাঠামোর সমস্যা সমাধান করতে পারে না, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক পরিবেশের আরও অবনতি ঘটাবে। চীন ও ইউরোপের উচিত উন্মুক্ত মন নিয়ে সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়া এবং দুই পক্ষের সম্পর্ককে স্বাধীন ও উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক দিকে নিয়ে যাওয়া।
ম্যাকখোঁ বলেন, তাঁর দেশ দৃঢ়ভাবে এক চীন নীতি মেনে চলে এবং দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে সম্প্রসারণ করতে ইচ্ছুক। ফ্রান্স চীনের সঙ্গে পারস্পরিক বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে এবং বন্ধুত্ব জোরদার করতে আগ্রহী। ফ্রান্স চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বিশ্ব পরিচালনা ও বিশ্ব অর্থনীতি সম্পর্কিত প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। ফ্রান্স চীনের সঙ্গে মিলে বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে ইচ্ছুক।
তথ্য সূত্র:শুয়েই-তৌহিদ-জিনিয়া,সিএমজি।