বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণের লক্ষ্যে পে কমিশনের জন্য একটি পৃথক কমিশন গঠনের কাজ চলছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার একটি কার্যকর ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করবে, যার বাস্তবায়নের দায়িত্ব পরবর্তী সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “পে কমিশনের জন্য একটি আলাদা কমিশন কাজ করছে। তিনটি রিপোর্ট পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত কমিশন ঘোষণা করা হবে। বর্তমান সরকার কেবল একটি কাঠামো তৈরি করবে, যা ভবিষ্যৎ সরকার বাস্তবায়ন করবে।”
অর্থ উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, গত আট বছরে পে কমিশন নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি, তাই এবার অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বাজেট, মুদ্রাস্ফীতি এবং সামাজিক খাতের ব্যয়সহ অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “পরবর্তী সরকার পে কমিশনের বাস্তবায়ন করবে—এটাই যৌক্তিক। কারণ একটি পূর্ণাঙ্গ সরকারই বড় আর্থিক কাঠামো ও বেতন সংস্কারের মতো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে উপযুক্ত।”
এছাড়া বৈঠকে রমজানের আগে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তেল ও চিনি আমদানির পরিকল্পনা অনুমোদনের কথাও জানান ড. সালেহউদ্দিন। খাদ্যপণ্যের মজুত ও সরবরাহ যাতে স্থিতিশীল থাকে, সে জন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ জোরদারে ৪০ হাজার ‘বডি অন ক্যামেরা’ কেনার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা জানান, “এ বিষয়ে আগামী বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন তিনি—বন্দরে আটকে থাকা পুরোনো ও পরিত্যক্ত গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ করে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয় এবং অর্থনৈতিক ক্ষতিও কমে আসে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপগুলো, বিশেষ করে পে কমিশন কাঠামো প্রণয়নের উদ্যোগ, দেশের অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক সংস্কারে এক গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।